নুরে আলম পারভেজ :
মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার বাহেরচর গ্রামের মোঃ কাউছার (৩৬) হত্যা মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ভুক্তভোগী পরিবার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।
মানববন্ধনে নিহতের মা মোসাঃ কুলসুম (৫৮) অভিযোগ করেন, তাঁর ছেলে মোঃ কাউছারকে পরিকল্পিতভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করা হলেও মামলা দায়েরের দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও পুলিশ এখনো কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমি আদালতে সি.আর মামলা নং-৪৫৭/২০২৫ ধারা ৩০২/৩৪ দন্ডবিধি মোতাবেক মামলা দায়ের করেছি। অথচ পুলিশের অবহেলা ও রহস্যজনক নিষ্ক্রিয়তার কারণে আসামিরা এখনো এলাকায় গা-ঢাকা দিয়ে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বরং তারা মামলার অগ্রগতি ব্যাহত করতে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।”
কুলসুম আরও অভিযোগ করেন, মামলা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা, প্রাণনাশের হুমকি, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের অপচেষ্টায় তাঁর পরিবার মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। তিনি দাবি করেন, স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের একাংশের প্রভাবশালী সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় ভাড়াটে দুষ্কৃতকারীরা মামলাটি ধামাচাপা দিতে অর্থের বিনিময়ে মিথ্যা মীমাংসার চাপ সৃষ্টি করছে, যা ভুক্তভোগী পরিবার দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কাউছার হত্যাকাণ্ড একটি সুপরিকল্পিত নৃশংস ঘটনা। আসামিদের রাজনৈতিক প্রভাব ও অর্থবলকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে প্রশাসনকে অকার্যকর করে তোলার চেষ্টা চলছে। বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটি স্বাধীন দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও একটি নিরীহ পরিবারকে বিচার পাওয়ার জন্য রাজপথে দাঁড়াতে হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
তারা অবিলম্বে হত্যা মামলার সকল আসামিকে গ্রেফতার করে আইনের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান। পাশাপাশি ভুক্তভোগী পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি), সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি জরুরি আহ্বান জানান।
বক্তারা সতর্ক করে বলেন, যদি দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি না করা হয়, তবে দেশের সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। তারা মনে করেন, এ ধরনের ঘটনা বিচারহীন থেকে গেলে সমাজে দৃষ্টান্তমূলক অপরাধ সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সাধারণ মানুষ আইনের প্রতি আস্থা হারাবে।
মানববন্ধনে নিহত কাউছারের পরিবার ছাড়াও স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।