Breaking News

ভ্যাট কমিশনারের দুর্নীতির সাম্রাজ্য: জনগণের টাকার হরিলুট!

স্টাফ রিপোর্টার :

ভ্যাট ও গোয়েন্দা বিভাগের কমিশনার মুহাম্মদ জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ এখন কেবল গুঞ্জন নয়, বরং একের পর এক প্রকাশিত তথ্যে তা যেন এক ভয়াবহ বাস্তবতায় রূপ নিয়েছে। এই প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী কীভাবে ক্ষমতার সর্বোচ্চ অপব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন, তার এক কদর্য চিত্র এখন জনসম্মুখে। যেখানেই তিনি পা রেখেছেন, সেখানেই গড়ে তুলেছেন দুর্নীতির এক বিশাল সাম্রাজ্য, আর এর শিকার হচ্ছে রাষ্ট্রের নিরীহ জনগণ।

মুহাম্মদ জাকির হোসেনের সম্পদের পরিমাণ তার বৈধ আয়ের সঙ্গে কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। অভিযোগের তীর বলছে, তিনি কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে সেই অর্থ স্ত্রী ও নিকটাত্মীয়দের নামে রেখেছেন। সবচেয়ে জঘন্য ঘটনা হলো, ২০২২ সালে ৩০ লাখ টাকা খরচ করে বনানী ক্লাবের সদস্যপদ নিলেও, ২০২৩-২৪ করবর্ষে সেই টাকার কোনো হদিস তিনি তার ট্যাক্স ফাইলে দেখাননি। সরকারি চাকরি বিধিমালাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এই ধরনের কর্মকাণ্ড কি স্পষ্টতই দুর্নীতির বহিঃপ্রকাশ নয়? দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাকে তলব করলেও, কেন এর বিরুদ্ধে কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দানা বাঁধছে।

ঢাকার কাস্টমস কমিশনার থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পে ব্যাপক লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুসারে, তিনি প্রকল্পের কাজ নিজের শ্যালকের মতো ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছেন এবং সরকারি কোষাগারের বিপুল অর্থ লোপাট করেছেন। ৪০ হাজার টাকার একটি এসি ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় কিনে জনগণের টাকাকে কীভাবে হরিলুট করা হয়েছে, তা স্পষ্টতই প্রমাণ করে যে, তিনি রাষ্ট্রীয় সম্পদকে নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করেছেন।

যিনি রাষ্ট্রের রাজস্ব সুরক্ষায় নিয়োজিত, তিনিই কি না জড়িয়ে পড়েছেন সোনা চোরাচালানের মতো গুরুতর অপরাধে! অভিযোগ রয়েছে, তার স্ত্রী ঢাকার বিমানবন্দরে সোনা নিয়ে আটক হয়েছিলেন। এখানেই শেষ নয়, দুর্নীতির কুখ্যাত কারিগর “গোল্ডেন মনির”-এর সঙ্গে তার যোগসাজশ এখন ওপেন সিক্রেট। মনিরের বাড়িতে অভিযানের আগেই বিপুল পরিমাণ সোনা ও নগদ অর্থ সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে, যার একটি বড় অংশ জাকির হোসেন এবং তার স্ত্রী আত্মসাৎ করেছেন।

সার্বিক বিষয়ে কথা বলতে জাকির হোসেনের মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। পরবর্তী সময়ে হোয়াটস অ্যাপে বার্তা পাঠিয়েও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।

একের পর এক ভয়াবহ অভিযোগের পরও এই সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কেন কোনো চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? তার মতো ব্যক্তিরা যদি সর্বোচ্চ পদে থেকে এমন দুর্নীতি করে পার পেয়ে যান, তবে রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতির শিকড় আরও গভীরে প্রবেশ করবে। সরকার কি এই ধরনের রাঘববোয়ালদের প্রতি কোনো কঠোর বার্তা দেবে না? নাকি তারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে?

Print This Post

About newsdesk

Check Also

রাজনীতির আড়ালে প্রতারণার সাম্রাজ্য: কাজি ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের প্রোপাইটরের চাঞ্চল্যকর কাহিনি

স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়া এলাকায় কাজি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি এজেন্সির বিরুদ্ধে ভয়ংকর প্রতারণার …

Leave a Reply