- স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়া এলাকায় কাজি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি এজেন্সির বিরুদ্ধে ভয়ংকর প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রোপাইটর নর্থ মেসিডোনিয়া সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে জাল ভিসা দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রাজধানীর এক ভুক্তভোগী জানান—
“নর্থ মেসিডোনিয়ায় পাঠানোর আশ্বাসে আমি ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। সময় পার হয়ে গেছে, কিন্তু এখনো ভিসা তো পাইনি, উল্টো টাকা ফেরত চাইলে আমাকে ভয় দেখানো হয়।”
একজন ভুক্তভোগী বলেন,
“আমি আত্মীয়দের কাছ থেকে ধার করে ৭ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। পরে জানতে পারি ভিসাটা পুরোপুরি জাল। জীবনের সব সঞ্চয় এক মুহূর্তে শেষ হয়ে গেল।”
অভিযোগ রয়েছে, মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় বসেই প্রোপাইটর ভুয়া ভিসা ও কাগজপত্র দেখিয়ে প্রতারণা চালান। বিভিন্ন জেলা থেকেও অসংখ্য মানুষ তার ফাঁদে পড়েছেন।
এক স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষোভের সাথে বলেন,
“আমরা দেখেছি, প্রতিদিনই নতুন নতুন মানুষ তার অফিসে আসে। পরে শুনি তারা সবাই প্রতারিত হয়েছে।”
ভুক্তভোগীরা জানান, টাকার দাবি করলে প্রোপাইটর নিজেকে গণ অধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি পরিচয় দেন। কখনও আবার নিজেকে বড় রাজনৈতিক নেতা সাজিয়ে ভয় দেখান।
এক ভুক্তভোগী জানান,
“তিনি সরাসরি বলেছিলেন, আমি বড় নেতা, আমার কিছু হলে উপর থেকে সবাই দেখে নেবে। তখন ভয় পেয়ে আমরা আর কিছু বলতে পারিনি।”
একজন তদন্তকারী কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন—
“আমরা প্রাথমিকভাবে অভিযোগ পেয়েছি। জাল ভিসা ও আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সমাজবিজ্ঞানী ড. হুমায়ুন কবীর বলেন—
“এ ধরনের প্রতারণা শুধু মানুষের অর্থনৈতিক ক্ষতি করে না, বরং দেশের ভাবমূর্তিকেও ক্ষুণ্ণ করে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কঠোর নজরদারি বাড়াতে হবে।”
বিদেশে চাকরি বা ভিসার প্রলোভনে কোনো এজেন্সিকে টাকা দেওয়ার আগে অবশ্যই সরকারি অনুমোদিত তালিকা যাচাই করার আহ্বান জানিয়েছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা।
(চলবে…)
কাজি ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের প্রতারণা চক্রের আরও অজানা তথ্য, অতিরিক্ত ভুক্তভোগীদের সাক্ষাৎকার ও আইনি প্রক্রিয়ার অগ্রগতি প্রকাশিত হবে আমাদের পরবর্তী পর্বে।