মো:বশির আহমেদ (ঢাকা) :
সাংবাদিকতা একটি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে পরিচিত। স্বাধীন সাংবাদিকতা তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করে এবং দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে শক্তিশালী ভূমিকা রাখে। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে কিছু সাংবাদিক বারবার হয়রানি মানহানি এবং ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন যা সাংবাদিকতার মৌলিক মূল্যবোধকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে।
আমি মোহাম্মদ বশির আহমেদ:নৈতিক দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণে দীর্ঘ বছর যাবত সাংবাদিক পেশায় দায়িত্ব পালন করে আসছি,গত ৫ই জুন ২০২৫ প্রথমে এক সাংবাদিকের মাধ্যমে আমার একটি ফোন কল আসে এবং তথ্য সংগ্রহের জন্য আমাকে ঢাকস্থ সাইনবোর্ড এলাকায় একটি তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রস্তাব করা হয়, কাজের ধরন:স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে প্রশাসনিক একটি অভিযানের তথ্য সংগ্রহ করতে হবে গত ৫ ই জুন সন্ধ্যা আনুমানিক ৭:৩০ মিনিটের দিকে দিকে অভিযোগকারী সাংবাদিক মো:সালদার দৈনিক মুক্ত খবর এর সাথে উক্ত ঘটনায় উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে উক্ত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং ঘটনাস্থল সাইনবোর্ড যাওয়ার পরে অভিযোগকারীরা তাদের একটি নির্দিষ্ট ক্লাবে নিয়ে যায় এবং তাদের মোবাইলে ধারণকৃত পূর্বে সাজেদা হাসপাতাল বর্তমানে আবাসিক হোটেল নামে পরিচিত হোটেলের অনৈতিক কাজের কিছু ভিডিও ক্লিপ দেখানো হয়, এবং স্থানীয়ভাবে তারা এটি বন্ধ করতে চায় সে ক্ষেত্রে তারা সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপ কামনা করে,এবং তারা সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে তারা অনৈতিক কার্যকে বন্ধ করতে যাচ্ছেন, এক পর্যায়ে আমাদেরকে উক্ত “সাজেদা হাসপাতাল”নামে পরিচিত যেটির বর্তমানে আবাসিক হোটেল হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে, হোটেলটি ঢাকা থেকে কুমিল্লা মুখী কাঁচপুর ব্রিজের ঢালে চিটাগাং রোডের পাশে অবস্থিত,এবং এক পর্যায়ে প্রমাণস্বরূপ আমাদেরকে হোটেলটি দেখানোর জন্য নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব করার ভিত্তিতে স্থানীয় সাংবাদিকদের সমন্বয় এবং উক্ত সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পৃথক পৃথক ভাবে ছায়া তদন্তের জন্য উক্ত আবাসিক হোটেলের সম্মুখে হাজির হই এবং যাওয়া সাথে সাথে হোটেল কর্তৃপক্ষ এবং অভিযোগকারীদের বেপরোয়া আচরণের কারণে তাৎক্ষণিক আমরা সকলেই উক্ত স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হই,এবং বেপরোয়া আচরণের কারণে হোটেল কর্তৃপক্ষের কারো সাথেই আমাদের কারো কথা বলার মত কোন সুযোগ হয়নি,এবং এক পর্যায়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রেক্ষিতে আমরা সকলেই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় উক্ত বিষয়টির বিস্তারিত অবগতির জন্য উপস্থিত হই, এবং সংশ্লিষ্ট থানার ওসি কে ফোন করা হয়,জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য সংগ্রহের এবং প্রচারের অধিকার সাংবাদিকদের রয়েছে। কিছুদিন আগে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে একজন নারী সাংবাদিক সচিবালয়ে হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন এবং উল্টো তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের হয়েছিল। এখানে টেনে আনা হয়েছে অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টের প্রসঙ্গ। অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট মূলত একটি ঔপনিবেশিক আইন। ব্রিটিশ শাসনামলে এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। ১৮৯৯ সাল থেকে ১৯০৫ সাল পর্যন্ত লর্ড কার্জন যখন ভারতবর্ষের ভাইসরয় ছিলেন তখন এই আইন প্রণয়ন করা হয়। বেশ কয়েক দফা সংশোধিত হয়ে ১৯২৩ সালে অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট জারি করা হয়। মূলত এই আইনটি তৈরি করে সত্যকে আড়ালে রাখার জন্য। এর সঙ্গে সঙ্গে ওথ অব সিক্রেসি, গভর্নমেন্ট রুলস অব বিজনেস এবং কনটেম্পট্ অব কোর্ট আইনগুলো অবাধ তথ্য প্রবাহের পথে নিষেধাজ্ঞা জারি করে,
আজকের সভ্যতাকে একটি ইমারতের সঙ্গে তুলনা করা হলে গণমাধ্যমগুলোকে এ ইমারতের এক একটি স্তম্ভ বলা যায়। সংবাদপত্র হচ্ছে আধুনিক সভ্যতার প্রাণ। এটি সমাজের সামগ্রিক পরিচয়ের প্রাত্যহিক দলিল। সমাজের অসঙ্গতি দূর করার ক্ষেত্রে সংবাদপত্র এবং সমাজ বিনির্মাণে সাংবাদিক তথা গণমাধ্যমের ভূমিকা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। রাজনৈতিক উত্থান-পতন ও যুদ্ধ-বিগ্রহের বর্ণনা থেকে শুরু করে বিদ্রোহ, বিপস্নব, প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার চিত্র সব কিছুই এর আওতায়
মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলার: হুমকি
সব সময় অপরাধীরা নিজেকে বাঁচানোর জন্য,সাংবাদিককে টার্গেট করে মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে ফাঁসানোর অপচেষ্টা করে থাকে।
আমরা এই মিথ্যা প্রচারণার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এটি আমাদের পেশাগত সততা ও স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর সরাসরি আঘাত।
আইনগত দিক:
সাংবাদিকদের মানহানির বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী নিম্নোক্ত পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে:
ফৌজদারি দণ্ডবিধি: ধারা ৫০০ (মানহানির অভিযোগে)
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮: সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা প্রচার বা হুমকি
হাইকোর্টে রিট পিটিশন: মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ। সাংবাদিক সংগঠন ও নাগরিক সমাজের ভূমিকা
সাংবাদিক ইউনিয়ন, প্রেস ক্লাব, ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর উচিত ভুক্তভোগী সাংবাদিকের পাশে দাঁড়ানো, গণমাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো, এবং সরকারকে সুনির্দিষ্ট তদন্তে বাধ্য করা।
পরিণতি ও সুপারিশ
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনি সহায়তা দিতে হবে
মানহানির অভিযোগে দ্রুত তদন্ত ও বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে
সংবাদপত্র বা মিডিয়া হাউজকে ভুক্তভোগী সাংবাদিকের পাশে দাঁড়াতে হবে
ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে
স্বাধীন সাংবাদিকতা গণতন্ত্রের প্রাণ। একজন সাংবাদিকের মানহানি ও ফাঁসানোর চেষ্টা শুধু ব্যক্তি আক্রমণ নয়, এটি পুরো সাংবাদিক সমাজ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত। এজন্য রাষ্ট্র, সমাজ ও সকল নাগরিকের সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলা প্রয়োজন।