Breaking News

চট্টগ্রাম বিআরটিএ অফিসে দালালচক্রের দৌরাত্ম্য, কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক :

চট্টগ্রামস্থ বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) অফিস এখন আর সাধারণ মানুষের সেবাপ্রাপ্তির কেন্দ্র নয়; বরং এটি পরিণত হয়েছে দুর্নীতি, দালালচক্র ও হয়রানির এক ‘অভেদ্য দুর্গে’। ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন কিংবা নতুন লাইসেন্স পেতে আসা মানুষকে ঘুষ ছাড়া কোনোভাবেই সেবা দেওয়া হয় না—এমন অভিযোগে ছেয়ে গেছে হাটহাজারীর নতুনপাড়া এলাকার এই কার্যালয়।

সেবাপ্রার্থীদের অভিযোগ, প্রতি লাইসেন্স ইস্যু বা নবায়নের ক্ষেত্রে দালালদের মাধ্যমে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়া হচ্ছে। আর ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানালে নানা অজুহাতে ফেল করানো হচ্ছে। প্রতি মাসে প্রায় ২৪০০ জন সেবাপ্রার্থী ভাইভায় অংশ নিলেও অর্ধেকেরও বেশি মানুষকে শুধু ঘুষের বিনিময়ে পাশ করানো হয়। এতে অবৈধভাবে প্রতি মাসে অন্তত এক কোটি টাকার বেশি হাতবদল হয়, যার ভাগ পিয়ন থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের পকেটে চলে যায় বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগী নুরুল আবছার আনছারী বলেন, তার পেশাদার লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তিনি নিয়মিত ফি বাবদ ২৭১৪ টাকা জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাতে দুই বছর ধরে তাকে হয়রানি করতে থাকে। পরবর্তীতে আবার নতুন করে ২০৭০ টাকা (লেইট ফি সহ) জমা দিতে বলা হয়। এর আগে জমাকৃত অর্থের কোনো হিসাব দেয়নি বিআরটিএ। শেষ পর্যন্ত বিকাশের মাধ্যমে ৪৫৫৭ টাকা দিয়ে পুনরায় আবেদন করতে বাধ্য হন তিনি। এতে লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বেআইনিভাবে তাকে লেইট ফি দিতে হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিআরটিএ’র লাইসেন্স শাখার সহকারী পরিচালক মো. ওমর ফারুক সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমাদের অফিসে কোনো দালাল নেই, কাউকে হয়রানি করা হয় না।” তবে সেবাপ্রার্থীরা বলছেন, কর্মকর্তার এই বক্তব্য বাস্তবতার সঙ্গে সম্পূর্ণ অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

এদিকে, এই দুর্নীতি ও হয়রানির বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং বিআরটিএ চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে—সত্যিই কি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে, নাকি বরাবরের মতোই নীরব থেকে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে?

Print This Post

About newsdesk

Check Also

গাউকের প্রধান ইমারত পরিদর্শক ওমর ফারুকের লাগামহীন দুর্নীতির ভয়াল থাবা!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট : গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (গাউক) প্রধান ইমারত পরিদর্শক ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে ভয়াবহ দুর্নীতির …

Leave a Reply