Breaking News

মাদক থেকে মুক্তি চায় হাজীগঞ্জ-পাঠানটুলীবাসী

অনলাইন ডেস্ক :
‘মাদকমুক্ত ফতুল্লা চাই’, বলেছিলেন ফতুল্লা মডেল থানার ইনচার্জ আসলাম
সাহেব। একই কথা বলেছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ইনচার্জ মশিউর রহমান পিপিএম
বার। এছাড়াও যে কোনো অনুষ্ঠানের অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উভয়েই
বলেন একই কথা। অথচ তারা কি কথা রাখতে সফল হয়েছেন?

ফতুল্লা থানাধীন একটি গ্রাম নিউ হাজীগঞ্জ। সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন আরেকটি
গ্রাম হলো পাঠানতলী যা সিটি কর্পোরেশনের আট নম্বর ওয়ার্ড এর আওতাধীন। এই
দুটি গ্রাম পাশাপাশি একত্রিত যাকে দুই থানার বর্ডার বলা হয়। এই গ্রামে
চলে মাদকের অভয়ারণ্য। বেড়েছে কিশোর গ্যাং। ঘর থেকে হাত বাড়ালেই যেন মাদক
পাওয়া যায়। ২০০০ সাল থেকে ২০০৩ পর্যন্ত এই গ্রামের মাদক ব্যবসার
নিয়ন্ত্রণ ছিল ক্রসফায়ারে নিহত দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী
রকমতের অধীনে। ঐ সময় থেকেই এই দুটি এলাকা কিলার রকমতের মাদকের রাজ্য ছিল।

রকমত নিহত হওয়ার পর পর্যায়ক্রমে অনেকেই তা নিয়ন্ত্রণ করতেন। তারপর
মাস্টার দেলু কিশোর গ্যাং দিয়ে এই এলাকায় মাদক ব্যবসায়ে নিয়ন্ত্রণ করতো।
মাস্টার দেলু র‌্যাব-১১’র হাতে ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার পর তার বাহিনীরা
এখনও এই এলাকা দুটি (পাঠানতলী ও নিউ হাজীগঞ্জ) নিয়ন্ত্রণ করে আসছে
দীর্ঘদীন যাবৎ। মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাংদের উৎপাতে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ
হয়ে পড়েছেন।

এলাকাবাসীর ভাষ্য, এখন যদি এই মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাংদের বিরুদ্ধে
রুখে দাড়ানো না যায়, তাহলে আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ হবে অন্ধকার। আমাদের
মেয়েরা নিয়মিত স্কুলে যেতে পারছে না। মোড়ে মোড়ে বসে থাকে কিশোর গ্যাং ও
মাদক ব্যবসায়ীরা। তারা ইভ-টিজিং করে থাকে। এই হাজীগঞ্জে ইভ-টিজিংকে
কেন্দ্র করে হয়েছিল কিশোর গ্যাংদের মারামারি। থানা-পুলিশও গড়িয়েছিল।
কিন্তু কোন সুফল আসেনি। তাই তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে আমরা
স্থানীয় জনগণ ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার হস্তক্ষেপ কামনা করছি। অনেক
কিশোর গ্যাং যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। এদের
যেন থামাবার কেউ নেই। তাই আমরা এলাকাবাসী মাননীয় সংসদ সদস্য
নারায়ণগঞ্জ-৪, একেএম শামীম ওসমান এমপি মহোদয়ের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি,
তিনি যেন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন।

এলাকাসূত্রে জানা যায়, হাজীগঞ্জ মাজার, হাজীগঞ্জ ঈদগাহ্, পাঠানটুলী
কবরস্থান রোড, হাজীগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠ, আদর্শ কলোনী
(বাস্তুহারা), মুলিবাঁশ মোড়, সরিষা ভিলা, হযরত শাহজালাল রোড এই
অঞ্চলগুলোতে সন্ধ্যার পর বসে মাদকের হাট।

এ বিষয়ে স্থানীয় যুবলীগ নেতা মোঃ কাজী সাগরকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি
এই ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। আমার নেতা একেএম শামীম ওসমানের নির্দেশ
যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগে কোন মাদক ব্যবসায়ী, ভূমিদস্যুদের স্থান
দেওয়া যাবে না। আমরা সেই লক্ষ্যে ফতুল্লা থানাধীন এই ওয়ার্ড কমিটি করেছি।
আমার নেতা ফতুল্লা থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাইজুল ইসলাম আমাকে এ
বিষয়ে অনেক সহায়তা করেছেন। আপনারা জানেন, আমি নিজেও প্রয়াস মাদকাসক্ত
নিরাময় ও পূনর্বাসন কেন্দ্রের সাথে জড়িত। এখানে আমি এলাকার অনেক
মাদকাসক্ত লোকদের নিজে চিকিৎসা করিয়েছি। মাদকের বিরুদ্ধে আমি অভিযানও
চালিয়েছি। এটি একটি ডায়াবেটিসের মত রোগ। সবার আগে জনসচেতনতা প্রয়োজন।
স্থানীয় জনগণ, সংবাদকর্মী ও প্রশাসন মিলিত সহায়তায় এর সমাধান সম্ভব।

এ বিষয়ে ফতুল্লা থানার ওসি আসলাম সাহেবকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,
মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। যতক্ষণ না ফতুল্লা থানায় মাদক
জিরো টলারেন্স নীতিতে না আসবে ততক্ষণ অভিযান চলবে। এই এলাকায় অভিযান
চালানো হবে এবং তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুত্র : নিজস্ব প্রতিবেদক

Print This Post

About Amena Fatema

Check Also

রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য-বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ

বাংলাদেশ-রাশিয়া সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর …

Leave a Reply